বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় বহু অভিবাসন প্রত্যাশীকে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এই নীতি কার্যকর হলে বরিস জনসনের রক্ষণশীল সরকারের অভিবাসন প্রক্রিয়া কঠোর করার অবস্থানকে নতুন মাত্রা দেবে। তবে এ পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী। তারা যুক্তরাজ্য সরকারের এ পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, এমন নীতি নেওয়া হলে তা অমানবিক ও শরণার্থী বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর লংঘন হবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা অন্য দেশগুলোকেও শরণার্থীদের তৃতীয় কোনো দেশে ‘স্থানান্তর’ করতে উৎসাহিত করবে।
বৃহস্পতিবার দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এ পরিকল্পনার আওতায় আলবেনিয়া, ইরাক ও সুদান থেকে দীর্ঘ যাত্রার পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীকে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা হবে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ নীতি কার্যকরের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন বরিস। ‘‘যুক্তরাজ্য একটি সমান্তরাল অবৈধ ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে পারে না। আমাদের সহানুভূতি অসীম হতে পারে, কিন্তু মানুষকে সাহায্য করার সক্ষমতা অসীম নয়।’ নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, জনসনের এই পরিকল্পনার আওতায় যারা রুয়ান্ডার তথাকথিত ‘জরুরি ট্রানজিট’ কেন্দ্রগুলোতে যাবে তাদেরকে যুক্তরাজ্য বাদে অন্য কোনো দেশে পুনর্বাসন চাওয়া, নিজের দেশে বা যে দেশে আশ্রিত ছিলেন সেখানে ফেরত পাঠানো কিংবা রুয়ান্ডায় থেকে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে যুক্তরাজ্য রুয়ান্ডাকে প্রায় ১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার দেবে; যা শিক্ষা, বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও ভাষা শিক্ষাসহ নানান উদ্যোগে ব্যয় করা যাবে।
তবে এ আইনটি বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নির্ভর করছে দেশটির পার্লামেন্টের বিবেচনায় থাকা একটি আইনের ওপর। পার্লামেন্টে জনসনের দলের ভালো সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তা পাসের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।আইনটি পাস হলে, বৈধ ভিসা ছাড়া কিংবা সরকারঘোষিত ‘অনিয়মিত পথে’ যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। এই আইন পাস হলেও ‘রাতারাতি তা কার্যকর হবে না’ বলে জানিয়েছেন বরিস জনসন। আনুষ্ঠানিক চুক্তির উদ্দেশে রুয়ান্ডায় পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। অভিবাসন প্রত্যাশীদের অধিকার সুরক্ষার পরিবর্তে তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠানোর সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।